Carbon tax/কার্বন কর

Carbon Tax
সকাল উঠে আপনি কোথাও যাবেন বাহিরে আপনার একটি বাইক আছে যা আপনি ব্যবহার করেন।তো বাইক নিয়ে বেরিয়ে পরছেন, বাইক স্টাট দিতেই মনে পরল আজ থেকে নাকি সরকার আপনার বাইকের উপর কার্বন কর ব্যবস্থা নামক এক কর ব্যবস্থা চালু করছে।আচ্ছা কার্বন কর!এত এত কর!এই কার্বন কর আবার কি? সাধারণত কর ব্যবস্থা থাকে যাতে করে সরকারের আওতার ভেতরে প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তির পক্ষ থেকে সরকারী কার্যাবলীর সহায়তার জন্য সরকারকে প্রদেয় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ই কর।এক্ষেত্রে কার্বন কর ব্যবস্থায় বলা হয় জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যাকে কেন্দ্র করে কার্বন নিঃসরণ এর পরিমান এর উপর ভিত্তি করে সরকারি কর প্রদান করতে হবে।তবে ভয় পাবার কিছু নেই সরাসরি কার্বন কর এই ব্যবস্থা আমাদের দেশে অর্থাৎ বাংলাদেশে এখনও চালু হই নি।বিশ্বের উন্নত শিল্প সমৃদ্ধ দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ এর দিক দিয়ে এগিয়ে যেমনঃ যুক্তরাষ্ট্র,চীন,কানাডা,ভারত,ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশগুলো রয়েছে।

Carbon Emission
কার্বন কর বাস্তবায়নকারী প্রথম দেশ হল ফিনল্যান্ড যা ১৯৯০ সালে।যুক্তরাষ্ট্রের কিছু স্টেটে,ভারত,ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহে এই কর দেখা যায়।কিছুদিন আগে কানাডায় ও এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে।বিশ্বের প্রায় ৪০ টি দেশে এবং ২০ টি শহরে কার্বন কর ব্যবস্থা চালু রয়েছে।বিশ্বের জলবায়ু সমস্যা কয়েকটি বড় সমস্যার মধ্য অন্যতম প্রধান সমস্যা।শিল্প উন্নয়ন এইসব জলবায়ু সম্পর্কিত যা পরিবেশ অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ।জলবায়ু পরিবর্তন এর একটি উৎকৃষ্ট উদাহরন এই বছরের বন্যা কিংবা ইউরোপ এর এই বছরের রেকর্ড পরিমান তাপমাত্রা।বৈশ্বিক আবহাওয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশেরও অবস্থা ভালো নেই।এই অবস্থার সাথে লড়াই করার জন্য এক ধরনের ব্যাবস্থা চালু রয়েছে এই ব্যাবস্থার নাম হলো কার্বন কর।
কার্বন কর হল একটি পিগোভিয়ান কর (Pigovian tax) ব্যবস্থা ।পিগোভিয়ান কর হল যে কোনো বাজার ক্রিয়াকলাপের উপর কর যা নেতিবাচক বাহ্যিকতা (Negative externality) উৎপন্ন করে যা বাজারের দামের অন্তর্ভুক্ত নয়।
Arthur Cecil Pigou (1877-1959)
ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ আর্থার পিগৌই (Arthar Pigou বা A.C Pigou) এর নামে নামকরণ করা হয়, পিগোভিয়ান করগুলি কিছুটা ভাল কাজ করে কারণ তারা সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ আচরণকে উৎসাহ দেয়।কার্বন কর হল জ্বালানীগুলির কার্বন উপাদানের উপর আরোপিত কর এবং কার্বন নিঃসরণ ব্যবসায়ের মতো কার্বন মূল্য নির্ধারণের এক প্রকার।এই কার্বন কর ব্যবস্থা মূলত বিভিন্ন ধরনের শিল্প কারখানা থেকে শুরু করে গাড়ি,মোটর বাইক ইত্যাদি থেকে নিঃসৃত কার্বন এর উপর নিদিষ্ট কর আরোপ করে থাকে।উদাহরন এর জন্য ধরুন,যে সিগারেট মানব স্বাস্থ্য এর জন্য ক্ষতিকারক।এর জন্য যদি সিগারেট এর উপর কর আরোপ করা হয় তাহলে মানুষ সিগারেট কঞ্জাম্পশন কমিয়ে দেয়।ঠিক এমনভাবেই কার্বন কর এর ফলে মানুষ নাবায়নযোগ্য যানবাহন ও জ্বালানির দিকে ঝুকবে।এক্ষেত্রে কার্বন কর বাড়িয়ে বেতন বা আয় কর কমিয়ে দিয়ে পরিবেশ গত দিক বিবেচনা করা হতে পারে।
Carbon Tax

গবেষণায় দেখা গেছে যে কার্বন কর কার্যকরভাবে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস করে।অর্থনীতিবিদরা সাধারন যুক্তি দেখান যে জলবায়ু পরিবর্তন কে নিয়ন্ত্রন কার্বন কর সবচেয়ে কাযকর উপায়,যার অর্থনীতির উপর সর্বনিম্ন প্রভাব রয়েছে।এই কর আরোপ এর ফলে কার্বন নিঃসৃত হয় ওই রকম ব্যবস্থার ব্যাতিক্রম ব্যবস্থা বা পরিকল্পনা চালু হয়ে থাকে।যেমনঃ সবুজ কারখানা ব্যবস্থা কিংবা টেসলা কোম্পানির ব্যাটারি চালিত গাড়ি।এই ধরনের ব্যবস্থায় মানুষ ফসিল ফুয়েল কিংবা জীবাশ্ম জ্বালানী (যা কিনা কার্বন নিঃসরণ অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ) নিজ থেকে সরে এসে পরিবেশ বান্ধন ব্যবস্থার দিকে ঝুকে।যেহেতু জীবাশ্ম জ্বালানীর জ্বলন থেকে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন সংশ্লিষ্ট জ্বালানীর কার্বন উপাদানের সাথে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত, তাই জ্বালানীগুলির কার্বন উপাদানকে জ্বালানীর পণ্য চক্রের যে কোনও সময়ে কর প্রয়োগ করে এই নেতিবাচক বাহ্যিক ক্ষতিপূরণ করা যায়।ফলে এই কর ব্যবস্থার দরুন মানুষ সচেতন হয় এবং অর্থনৈতিক ও পরিবেশবেশগত সমস্যার একটি সমাধান লক্ষ্য করা যায়।
লেখাটি বড় হয়ে যাচ্ছে তাই আর না বাড়িয়ে পরবর্তী তে এই বিষয়ে আরও কিছু নিয়ে আসার চেষ্টা করব।সে পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকবেন।এই বিষয়ে আপনাদের কিছু জানার থাকলে ইনবক্স অথবা কমেন্টে জানাতে পারেন।আমরা আপনাদের উওর দেওয়ার চেস্টা করব।ধন্যবাদ।

লেখক
মোঃ শফিউল্লাহ উৎস
অর্থনীতি বিভাগ (২য় বর্ষ)
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

No comments

Powered by Blogger.